চলকের পরিচয় সহ প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র ও নিয়ম
এখানে যা থাকছে---
- প্রচুরক বলতে কি বোঝায়
- প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র
- আয়তলেখ থেকে প্রচুরক নির্ণয়
- সারণি থেকে প্রচুরক নির্ণয়
- চলকের পরিচয় সহ প্রচুরক নির্ণয়
প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র ও নিয়ম |
পরিসংখ্যানে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপক পদ্ধতি গুলোর মধ্যে প্রচুরক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রচুরক সম্পর্কে ধারনার্জনের মাধ্যমে তথ্য উপাত্তের পরিমাপ ও প্রবণতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পাওয়া সম্ভব। আমাদের আজকের আলোচনা পরিসংখ্যানে প্রচুরক নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি ও সূত্র নিয়ে।
প্রচুরক কি বা কাকে বলেঃ
প্রচুর থেকে প্রচুরক শব্দের উৎপত্তি। প্রচুর বলতে বেশি সংখ্যক বার আছে এমন অর্থ প্রকাশ করে থাকে। আর যে সংখ্যা বা যে জিনিস বেশি সংখ্যক বার আছে সেই সংখ্যাকে প্রচুরক বলে। অর্থাৎ পরিসংখ্যান বা তথ্য উপাত্তে প্রচুর বা বেশি সংখ্যক বার আছে এমন সংখ্যাকে তথ্য উপাত্তের প্রচুরক বলে। ইংরেজিতে প্রচুরক কে Mode বলে। Mode শব্দের বাংলা আভিধানিক অর্থ ধরণ, প্রণালী বা আকৃতি। সুতারং প্রচুরক হলো সেই পরিসংখ্যানিক তথ্য উপাত্ত যে তথ্য উপাত্ত বেশি সংখ্যক বার আছে।
প্রচুরক নির্ণয়ের পদ্ধতি সমূহঃ
- ১. ছক বিহীন সাধারণ তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়
- ২. ছক যুক্ত সাধারণ গুরুত্ব যুক্ত তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়
- ৩. ছক যুক্ত শ্রেণি বিন্যাসকৃত তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়
- ৪. আয়তলেখ থেকে প্রচুরক নির্ণয়
ছক বিহীন সাধারণ তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়ের পদ্ধতিঃ
- ১ম ধাপ- তথ্য উপাত্তকে বিন্যস্ত করতে হবে।
- ২য় ধাপ- গণনা করে বেশি সংখ্যক তথ্য উপাত্ত বাছাই করে প্রচুরক নির্ণয় করতে হবে।
- ১. সবচেয়ে বেশি বার আছে এমন সংখ্যা কে প্রচুরক সংখ্যা বলে।
- ২. তথ্য উপাত্তে কোনো সংখ্যা বেশি বার না থাকলে তখন উত্তর হবে, প্রচুরক নেই, যেমন - ৫, ১০, ১৫ এর প্রচুরক হবে, এখানে প্রচুরক নেই।
- ৩. তথ্য উপাত্তে একাধিক সংখ্যা বেশি বার থাকলে প্রচুরক উভয় ধরণের সংখ্যা হবে, যেমন- ৫, ৫, ৫, ৭, ৭, ৯, ১০, ১০, ১০ সংখ্যা গুলোর প্রচুরক হবে ৫ ও ১০ কারণ এই সংখ্যা গুলো সবচেয়ে বেশি বার করে আছে।
ছক যুক্ত সাধারণ গুরুত্ব যুক্ত তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়ঃ
উপরের সাধারণ তথ্য যখন ছক আকারে থাকে তখন তাকে গুরুত্ব যুক্ত সাধারণ তথ্য বলে। যেমন- ৫, ৫, ১০, ১৫, ১৫, ১৫, ১৮, ২০ এই সংখ্যা গুলো লক্ষ্য করি। এখানে ৫ আছে ২ বার অর্থাৎ গণসংখ্যা ২, আবার ১০ আছে ১ বার অর্থাৎ গণসংখ্যা ১, আবার ১৫ আছে ৩ বার অর্থাৎ গণসংখ্যা ৩, আবার ১৮ আছে ১ বার অর্থাৎ গণসংখ্যা ১ এবং ২০ আছে ১ বার অর্থাৎ গণসংখ্যা ১। এই সংখ্যা বা তথ্য গুলো এভাবে না থেকে তথ্য গুলো নিম্নের ছক আকারেও থাকতে পারে--
সংখ্যা | গণসংখ্যা |
---|---|
৫ | ২ |
১০ | ১ |
১৫ | ৩ |
১৮ | ১ |
২০ | ১ |
ছক যুক্ত শ্রেণি বিন্যাসকৃত তথ্যের প্রচুরক নির্ণয়ঃ
প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র |
বিস্তারিত বুঝতে নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন-
চলকের পরিচয় সহ প্রচুরক নির্ণয় |
বুঝার সুবিধার্থে নিম্নে উদাহরণের সাহায্যে শ্রেণী যুক্ত তথ্যের প্রচুরক নির্ণয় করে দেখানো হলো-
শ্রেণী | গণসংখ্যা |
---|---|
৬-১০ | ২ |
১১-১৫ | ১ |
১৬-২০ | ৫ |
২১-২৫ | ৩ |
২৬-৩০ | ১ |
আয়তলেখ থেকে প্রচুরক নির্ণয়ঃ
আয়ত লেখের মাধ্যমে প্রচুরক নির্ণয়ের জন্য প্রথমে অবিচ্ছিন্ন শ্রেণী যুক্ত গণসংখ্যা সারণি তৈরি করে নিতে হবে। ছক কাগজে X অক্ষ বরাবর অবিচ্ছিন্ন শ্রেণী, Y অক্ষ বরাবর গণসংখ্যা, O কে মূলবিন্দু, শুরু বোঝাতে ভাঙ্গা চিহ্ন, X অক্ষ বরাবর প্রতি শ্রেণীর নিম্ন সীমা ও ঊর্ধ্ব সীমার মাঝে প্রতি ক্ষুদ্রতম বর্গের একি পরিমাণ একক বাহু, Y অক্ষ বরাবর ক্রমসংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে বর্গের সমান সংখ্যক একক বাহু গণনা করে ছক কাগজে আয়ত লেখ অংকন করতে হবে।
আয়ত লেখ অংকন করার ২য় পর্যায়ে যে শ্রেণীর আয়ত লেখ সবচেয়ে উচু বা সর্বোচ্চ, সেই শ্রেণীর আয়ত লেখ কে তার পাশের আয়ত লেখ থেকে যে পরিমাণ উচু সে পরিমাণ কে কলম বা পেন্সিলের কালি দিয়ে ভিন্ন ভাবে ভরাট করে দিলেই আয়ত লেখের সাহায্যে প্রচুরক নির্ণয় হয়ে যাবে।
নিম্নে উদাহরণের সাহায্যে ব্যখ্যা করা হলো-
শ্রেণী | গণসংখ্যা |
---|---|
৬-১০ | ২ |
১১-১৫ | ১ |
১৬-২০ | ৫ |
২১-২৫ | ৩ |
২৬-৩০ | ১ |
উপরোক্ত তথ্যের আয়ত লেখ অংকন করতে হবে।
শ্রেণী | অবিচ্ছিন্ন শ্রেণী | গণসংখ্যা |
---|---|---|
৬-১০ | ৫.৫-১০.৫ | ২ |
১১-১৫ | ১০.৫-১৫.৫ | ১ |
১৬-২০ | ১৫.৫-২০.৫ | ৫ |
২১-২৫ | ২০.৫-২৫-৫ | ৩ |
২৬-৩০ | ২৫.৫-৩০.৫ | ১ |
নিচের চিত্রে ছক কাগজে আয়ত লেখ অংকন করা হলো-
আয়তলেখের মাধ্যমে প্রচুরক নির্ণয় |
ছক কাগজে X অক্ষ বরাবর অবিচ্ছিন্ন শ্রেণী, Y অক্ষ বরাবর গণসংখ্যা, O কে মূলবিন্দু, শুরু বোঝাতে ভাঙ্গা চিহ্ন, X অক্ষ বরাবর প্রতি শ্রেণীর নিম্ন সীমা ও ঊর্ধ্ব সীমার মাঝে প্রতি ক্ষুদ্রতম বর্গের একি পরিমাণ একক বাহু, Y অক্ষ বরাবর ক্রমসংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে বর্গের সমান সংখ্যক একক বাহু গণনা করে ছক কাগজে আয়ত লেখ অংকন করা হলো। আয়ত লেখের প্রচুরক শ্রেণীর আয়ত কে ভিন্ন রং করে দেখানো হলো।
প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র ও টিপসঃ
- ১. সবচেয়ে বেশি গণসংখ্যা আছে এমন শ্রেণি কে প্রচুরক শ্রেণী বলে।
- ২. প্রচুরক নির্ণয় করতে গণসংখ্যা সারণিতে অতিরিক্ত কোনো ঘর কাটার প্রয়োজন হয় না।
- ৩. প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র L+{f1÷(f1+f2)}×h.
- ৪. প্রচুরক শব্দটি প্রচুর বা বেশি পরিমাণ ধারণা থেকে উৎপত্তি ঘটেছে।
- ৫. প্রচুরক একটি কেন্দ্রীয় প্রবনতার পরিমাপক পদ্ধতি।
নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon