গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির ওষুধ ও উপায়
এখানে যা থাকছে---
- গাভীর দুধ বৃদ্ধির উপায়
- গাভীর দুধ বাড়ানোর ওষুধ
- গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয়
গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির উপায় |
গরুর দুধ উৎপাদনের উপর দুগ্ধ খামারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। গাভীকে সঠিক নিয়মে নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে খামার বা বাড়িতে পালিত গাভী থেকে অধিক দুধ পাওয়া সম্ভব।
দুধ উৎপাদন বাড়াতে গাভী বাছাইঃ
দুধ উৎপাদন বাড়ানোর প্রথম শর্ত হলো ভালো মানের গাভী বাছাই করা। সাধারণত উন্নত জাতের গাভী থেকে বেশি দুধ পাওয়া যায়। হলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী অন্যান্য জাতের গাভী অপেক্ষা বেশি দুধ দেয়। জার্সি জাতের গরু থেকেও ভালো পরিমাণ দুধ পাওয়া যায়। তবে দেশি, সংকর অথবা উন্নত যে কোনো জাতের গাভী থেকে অধিক দুধ পেতে গাভীর প্রতি যত্নশীল হতে হয়। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে অধিক দুধ পাওয়া সম্ভব। গাভী বাছাই করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেনো গাভীর মাথা ছোট হয়, পিছনের দু-পায়ের মধ্যবর্তী স্থান চওড়া হয়, গায়ের পশপম মসৃন ও উজ্জ্বল চাহুনি হয়। সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত ভালো জাতের গরু থেকে অধিক পরিমাণ দুধ উৎপাদন সম্ভব।
গাভীর দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণঃ
গাভীর দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার নানাবিধ কারণ রয়েছে। অধিক পরিমাণে দুধ দেওয়া কালীন কৃমির ওষুধ খাওয়ালে হঠাৎ দুধ উৎপাদন কমে যেতে পারে। গাভীর নানারকম চিকিৎসার জন্য মুখে এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে রুমেনে থাকা মাইক্রোফোরা মারা যায় ফলে অরুচির পাশাপাশি বদহজম দেখা দেয় এবং দুধ উৎপাদন কমে যায়। অনেক সময় গাভীর নানারকম ছোট খাটো রোগ বা ক্ষয় জনিত রোগের চিকিৎসা করাতে দেরি হয়ে যায় বা অবহেলার কারণে চিকিৎসা করানো হয় না ফলে বিপাকীয় রোগ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দুধ উৎপাদন কমে যায়। নানারকম ভুল চিকিৎসার ফলে দুধ উৎপাদন কমে গেলে তা সারিয়ে উঠতে অনেক দেরি হয়ে যায়, তবে বিপাকীয় কারণে দুধ উৎপাদন কমে গেলে তা চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই ভালো করা যায়।
গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে কখন থেকে যত্ন নিতে হবেঃ
গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে বাছুর জন্মের ৩ মাস পূর্বথেকেই গাভীর যত্ন নিতে হবে। এই সময় থেকে গাভীকে প্রতিদিন জিংক (Zinc) ও ক্যালসিয়াম সিরাপ খাওয়াতে হবে। সপ্তাকে একটি করে মাল্টিভিটামিন ইঞ্জেকশন ও ক্যাটাফস ইঞ্জেকশন দিতে হবে। বাছুর জন্মের ২-৩ মাস পূর্বে দুধ দোহন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এভাবে যত্ন নিলে গাভী সুস্থ থাকবে এবং দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
দুধ বাড়াতে গাভীর পরিচর্যা ও যত্নঃ
- ১. গাভীকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে, গরমের দিনে দিনে দুই বার গোসল করানো যেতে পারে, শীতের দিনে হালকা গরম পানি দিয়ে সপ্তাহে ৩-৪ দিন গোসল করানো যেতে পারে।
- ২. নিয়মিত গোয়াল পরিষ্কার করতে হবে, সকাল বিকাল দুইবার গোয়াল বা খামার পরিষ্কার করা ভালো।
- ৩. সকাল ও বিকাল দুইবার গরুকে দানাদার খাবার দিতে হবে।
- ৪. গরুর চাহিদা মতো দিনে দুইবার ইউএমএস বা ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র বা ইউরিয়া ও চিটাগুড় প্রক্রিয়া জাত খড় খাওয়াতে হবে (ইউ.এম.এস তৈরির প্রক্রিয়া আমাদের অন্য আর্টিকেলে লেখা হয়েছে, খুজলে পেয়ে যাবেন), গাভী ইউ.এম.এস খেতে খুব পছন্দ করে এবং ইউ.এম.এস খাওয়ালে দানাদার খাদ্যের পরিমাণ কমিয়েও আগের চেয়ে বেশি দুধ পাওয়া সম্ভব।
- ৫. নিয়মিত পরিমিত মাত্রায় ১-২ বার গাভীকে কাচা ঘাস খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে, ঘাসের অভাবে খড় খাওয়াতে হবে।
- ৬. গর্ভে বাছুর থাকা অবস্থাতে-ই গাভীর খাবার ও অন্যান্য পরিচর্যা সঠিক নিয়মে করতে হবে।
- ৭. দানাদার খাদ্যের সাথে জল বা পানি মিশিয়ে না খাইয়ে শুকনা দানাদার খাদ্য খাওয়াতে হবে।
- ৮. গাভীর নিকট সবসময় একটি পাত্রে জল রাখতে হবে যাতে গাভী ইচ্ছা মতো জল খেতে পারে, এই পদ্ধতিতে (ফ্রি চুজ পদ্ধতি) জল খাওয়ালে গাভীর দুধ উৎপাদন আগের চেয়ে বৃদ্ধি পায়।
- ৯. গরুকে বাসি খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ১০. নিয়মিত খাবার ও পানির পাত্র জীবাণুনাশ জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- ১১. নিয়মিত গাভীকে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে।
- ১২. কোনো প্রকার রোগ দেখা দেওয়া মাত্র দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে খাবার সরবরাহঃ
- ১. গাভীকে দানাদার খাদ্য হিসেবে চালের কুড়া - ৩ কেজি, গমের ভূষি - ৪ কেজি, সয়ামিল - ৪ কেজি, যে কোনো ডালের ভূষি - ১ কেজি এই হারে একসাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
- ২. প্রতিদিন গাভীকে প্রথম ১ কেজি দুধের জন্য ৩ কেজি দানাদার খাদ্যা খাওয়াতে হবে এবং এর পর প্রতি ১ কেজি দুধ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আধা কেজি করে দানাদার খাদ্য বাড়াতে হবে, অর্থাৎ গাভী যে পরিমাণ দুধ দেয় তার চেয়ে ২ কেজি দুধ বাড়াতে ১ কেজি দানাদার খাদ্য বেশি খাওয়াতে হবে, এভাবে খাওয়াতে খাওয়াতে যখন আধা কেজি দানাদার খাওয়ালে গাভী আরো ১ কেজি বেশি দুধ উৎপাদন করতে পারবে না তখন দানাদার খাদ্য আর বাড়ানো যাবে না এবং এই হারে গাভীকে নিয়মিত দানাদার খাদ্য খাওয়াতে হবে।
- ৩. মোট দানাদার খাদ্যকে দুই ভাগ করে সকাল বিকাল দুইবার খাওয়াতে হবে।
- ৪. গাভীকে প্রতিদিন দুই বার চাহিদা মতো ইউ.এম.এস খড় খাওয়াতে হবে, এর পরিমাণ কমপক্ষে যেনো ৪-৬ কেজির বেশি হয় (ইউ.এম.এস তৈরির পদ্ধতি আমাদের অন্য আর্টিকেলে দেওয়া হয়েছে)।
- ৫. গাভীকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিষ্কার জল সরবরাহ করতে হবে, সবচেয়ে ভালো হয় গরুর কাছে একটি পাত্রে সবসময় পরিষ্কার জল রাখা।
দুগ্ধবতী গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে ওষুধ ও ভিটামিনঃ
- ১. গাভীকে দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর সময় এতে ডিসিপি পাওডার বা সিরাপ অথবা ক্যালসিয়াম পাওডার বা সিরাপ মিশিয়ে খাওয়াতে হবে অথবা দানাদার খাদ্য তৈরি বা মিশানোর সময় এর সাথে ডিসিপি বা ক্যালসিয়াম পাওডার মিশিয়ে রাখা যেতে পারে। ডিসিপি পাওডার যেমন - DCP plus (Opsonin), ক্যালসিয়াম সিরাপ যেমন - Calvit-P (Square)। দুধের বেশির ভাগ অংশ ক্যালসিয়াম তাই ডিসিপি বা ক্যালসিয়াম পরিমিত মাত্রায় প্যাকেট বা বোতলের গায়ে লেখা নির্দেশ বা মাত্রা মতো গাভীকে খাওয়াতে হবে।
- ২. গাভীকে দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর সময় এতে মাল্টিভিটামিন পাওডার বা সিরাপ মিশিয়ে খাওয়াতে হবে অথবা দানাদার খাদ্য তৈরি বা মিশানোর সময় এর সাথে মাল্টিভিটামিন পাওডার মিশিয়ে রাখা যেতে পারে। মাল্টিভিটামিন পাওডার যেমন - EVM Gold (Globe), মাল্টিভিটামিন খাওয়ালে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিপায় এবং দুধ উৎপাদন বেড়ে যায়। প্যাকেট বোতল বা বক্সের গায়ে লেখা নির্দেশ বা মাত্রা মতো গাভীকে প্রতিদিন পরিমিত মাত্রায় ভিটামন মিনারেল বা মাল্টিভিটামিন খাওয়াতে হবে।
- ৩. বাচ্চা প্রসবের ৩ মাস পূর্ব থেকে শুরুকরে দুধ দেওয়া কালীন প্রতিদিন গাভীকে জিংক সিরাপ খাওয়াতে হবে। জিংক সিরাপ যেমন - ZS Solution (Opsonin), বোতলের গায়ে থাকা নির্দেশ বা মাত্রা অনুযায়ী নিয়মিত খাওয়াতে হবে। জিংক রক্ত বৃদ্ধির সাথে সাথে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ৪. গাভীকে প্রতিদিন দানাদার খাদ্যের সাথে ভিটামিন ADE খাওয়াতে হবে অথবা প্রতি ১৫ দিন অন্তর Vitamin ADE ইঞ্জেকশন ওষুধের গায়ে থাকা লেবেল অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হবে।
- ৫. বাচ্চা প্রসবের এক সপ্তাহ আগে ১০ মিলি Catophos ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে। এই ইঞ্জেকশন মাংস ও দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ৬. বাচ্চা প্রসবের এক ঘন্টা পর ১০ মিলি ক্যাটোফস (Catophos) ইঞ্জেকশন ও ১০ মিলি মাল্টিভিটামিন ইঞ্জেকশন যেমন Bejec vet প্রয়োগ করতে হবে। প্রসব জনিত ধকল সামলাতে এটি সহায়তা করবে।
- ৭. গাভীর ওলানের গঠণ ঠিক রাখতে ও ওলানের ম্যাস্টাইটিস রোগ প্রতিরোধ করতে বাচ্চা প্রসবের ১০ দিন আগে থেকে শুরু করে ১০ দিন পর পর্যন্ত অল্প মাত্রায় Masti qure plus বা ম্যাস্টাইটিস প্রতিরোধক পাওডার খাওয়াতে হবে, সেই সাথে দুধ দেওয়া কালীন প্রতি মাসে ৩ দিন এই পাওডার খাওয়াতে হবে।
- ৮. বাচ্চা প্রসবের ১ সপ্তাহ পর ৫-১০ মিলি অক্সিন ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে এবং একদিন বাদ রেখে তার পরের দিন আরেক ডোজ ৫-১০ মিলি মাত্রায় অক্সিন ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতে হবে। অক্সিন ইঞ্জেকশন দুধ বৃদ্ধির সহায়ক।
- ৯. প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫ দিন রুচিবর্ধক পাওডার যেমন রুচিমিক্স ১ প্যাকেট করে খাওয়াতে হবে।
- ১০. অতিরিক্ত যত্ন হিসেবে বাজারে বিভিন্ন নামে পাওয়া দুধ বৃদ্ধি সহায়ক মিনারেল বা টনিক প্রতিদিন পরিমিত মাত্রায় খাওয়ানো যেতে পারে যেমন - এস. আর মিল্ক টনিক ৫-৮ চামচ করে প্রতিদিন খাওয়ানো যেতে পারে।
- ১১. প্রতি ৩-৪ মাস পরপর গরুকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট যেমন- Renadex vet tablet ৭৫ কেজি ওজনের গাভীর জন্য একটি বোলাস বা ট্যাবলেট হারে সকালে খালিপেটে খাওয়াতে হবে এবং ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর প্রচুর পানি খেতে দিতে হবে এবং কৃমিনাশক খাওয়ানোর কমপক্ষে ১ ঘন্টার মাঝে অন্য কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না। গাভী যখন সর্বচ্চো দুধ দেবে সে সময় কৃমিনাশক না খাইয়ে কিছুদিন দেরি করে খাওয়াতে হবে এবং কৃমিনাশক খাওয়ানোর পরের দিন থেকে পরপর ৫ দিন লিভারটনিক সিরাপ যেমন লিভাটন (Livaton) লেবেলে লেখা মাত্রা অনুযায়ী খাওয়াতে হবে।
গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে বাড়তি করণীয়ঃ
- ১. বাচ্চা প্রসবের কমপক্ষে ৬০-৯০ দিন পর গাভীকে পুনরয় ডাকে আসলে সিমেন বা বীজ দিতে হবে। ৬০-৯০ দিনের আগে সিমেন বা বীজ দিলে গরুর দুধ উৎপাদন দ্রুত হ্রাস পায় বা কমতে থাকে।
- ২. বাছুরের বয়স ৭ দিন হলে ধীরেধীরে অল্প অল্প করে দানাদার খাদ্য ও ঘাস খাইয়ে এতে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে (বাছুর পালন সম্পর্কে জানতে আমাদের আধুনিক পদ্ধতিতে বাছুর পালন আর্টিকেলটি পড়তে পারেন)। এভাবে দানাদার খাদ্য ও ঘাস খাওয়াতে অভ্যস্ত হলে বাছুরের দুধের চাহিদা কম হবে এবং দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
- ৩. দুধ দোয়ানোর বা দোহনের সময় ওলান বা বাটে থাকা সম্পূর্ণ দুধ দোয়াতে হবে বা সংগ্রহ করতে হবে। বাটে দুধ রেখে দোয়ানো বা দোহন শেষ করলে দুধ উৎপাদন কমে যায় এবং গাভী দ্রুত দুধ দেওয়া বন্ধ করে।
- ৪. প্রতিদিন এক বার দুধ না দুই'য়ে বা দোহন না করে সকাল বিকাল নির্দিষ্ট সময়ে একি ব্যক্তি দ্বারা দুই বার দুধ দোয়াতে হবে এতে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং দুধের গুণগত মান বৃদ্ধিপায়।
- ৫. দুধ দোহন বা দোয়ানোর সময় গাভীকে দানাদার খাদ্য খাওয়ানো যেতে পারে এতে গাভীর মনসংযোগ খাবারের দিকে যায়, গাভী বিরক্ত কম করে ফলে বেশি পরিমানে দুধ পাওয়া যায়।
- ৬. দুধ দোয়ানো বা দোহন করার সময় গাভীর সম্মুখে বাছুর রাখতে হবে এবং মশা মাছির উপদ্রব থেকে গাভীকে শান্ত রাখতে মশা মাছি তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
- ৭. দুধ দোহন শুরু করার পর ৮ মিনিটের মাঝে সম্পূর্ণ দুধ দোহন দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করতে হবে কারণ এই সময়ের মাঝে গাভী সর্বোচ্চ পরিমাণে দুধ দেয়।
- ৮. গাভীকে মাঝে মাঝে হাটাতে হবে বা ব্যায়াম করাতে হবে এতে গাভীর শরীর সুস্থ থাকে।
- ৯. দুধ দোয়ানোর আগে বাট ও ওলান ভালোকরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুইয়ে মুছে নিতে হবে এবং দোহন শেষে বাটে জীবাণুনাশ লিকুইড যেমন Povidon লাগিয়ে দিতে হবে।
- ১০. নিয়মিত খাবার পাত্র, গোয়াল বা খামার পরিষ্কার করতে হবে মাঝে মাঝে জীবাণুনাশ স্প্রে যেমন FAM 30 পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ও খাবার পাত্রে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- ১১. গাভীকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে এবং যে কোনো রোগ বা সমস্যা দেখা দেওয়া মাত্র বিলম্ব না করে ডাক্তারের পরামর্শ মতো ওষুধ দিতে হবে।
গাভীর দুধ বাড়াতে ঘরোয়া টোটকা, প্কৃতিক বা আয়ুর্বেদী পদ্ধতিঃ
- ১. এক কেজি খাটি সরিষার তেল থেকে অল্প পরিমাণ তেল কড়াইতে ঢেলে তাতে ২ কেজি শুকনো আস্ত হলুদ দিয়ে খয়েরী বা কালচে করে ভেজে নিতে হবে।
- ২. ভাজা হলুদ থেকে তেল ঝরিয়ে মিহি করে গুড়া করে নিতে হবে।
- ৩. একটি পাত্রে হলুদ গুড়ার মাঝে হলুদ থেকে ঝরিয়ে রাখা তেল সহ বাকি তেল ঢেলে দিতে হবে।
- ৪. তেল মিশ্রিত হলুদ গুড়ার মাঝে ২ কেজি আখের গুড় অথবা লাল চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
- ৫. মিশ্রণ টি একটি পাত্রে বা বয়েমে ঢেলে ৭ দিন ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে রেখে দিতে হবে।
- ৬. সাত দিন পর প্রতিদিন সকাল বেলা ১০০ গ্রাম করে গাভীকে খাওয়াতে হবে।
উক্ত টোটকা, প্রাকৃতিক বা আয়ুর্বেদী পদ্ধতিটি নিয়মিত গাভী বা গরুকে খাওয়ালে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে গাভীর খাদ্য চাহিদা বাড়বে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে হোমিও ওষুধঃ
- ১. চায়না অথবা আর্টিকা ইউরেন্স মাদারটিংচার ১০ মিলি করে প্রতিদিন একবার করে খাওয়াতে হবে এতে গাভীর রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং ভগ্ন দেহ ঠিক হয়ে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এটি জিংকের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
- ২. বায়োক্যামিক ওষুধ ক্যালকেরিয়া ফস ১২ এক্স ৪০-৫০ টি ট্যাবলেট সামান্য গরম পানি সহ ৩ দিন অন্তর একবার খাওয়াতে হবে। এটি ক্যালসিয়ামের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
- ৩. চেলিডোনিয়াম মাদারটিংচার ১০ মিলি করে সপ্তাহে ১ বার করে খাওয়াতে হবে। এটি লিভার টনিকের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
- ৪. এগনাসকাসট মাদার টিংচার প্রতিদিন ১০ ফোটা করে গাভীকে নিয়মিত খাওয়ালে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
উপরোক্ত হোমিও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে গাভী পালনে ব্যয় কমার পাশাপাশি দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে হোমিও ডাক্তারগণ মতামত দিয়েছেন।
উপরোক্ত নিয়ম গুলো অনুসরণ করলে আমরা পেতে পারি সুস্থ গাভী এবং অধিক দুধ।
নিচে কমেন্ট করুন। আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নতুন নতুন আরটিকেল লেখার প্রেরণা যোগায়।
2 comments
ভাই আমার গরুটা ৬ মাসের গাভী(ফ্রিজিয়ান)। হাট থেকে কেনা। এখন গরু যখন ই শুয়ে পড়ে তখন পিছন দিয়ে সাদা চিকন স্রাব আসে..এর কারন ও প্রতিকার কিভাবে করব
গাভী গর্ভবতী থাকাকালীন গর্ভের শেষ দিকে স্রাব ভাঙ্গতে পারে, এটা স্বাভাবিক ব্যপার। তবে একজন চিকিৎসক কে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে ওটি স্বাভাবিক স্রাব। অস্বাভাবিক হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon