রেখা কি বা কাকে বলে - রেখার সকল বৈশিষ্ট্য
- রেখা কি
- রেখা কাকে বলে
- রেখার বৈশিষ্ট্য
- রেখার সকল বৈশিষ্ট্য
রেখা |
রেখা সম্পর্কে জানার আগে যা জানা প্রয়োজনঃ
রেখা সম্পর্কে জানতে বা রেখার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারনার্জন করতে নিচের বিষয় গুলো জানা আবশ্যক -
বিন্দু কি - আসলে বিন্দু খালি চোখে দেখা যায় না। তবুও বিন্দুকে বুঝতে বা প্রকাশ করতে আমরা খাতা বা কোন বস্তুর উপর যে ফোটা বা চিহ্ন দি তাকেই বিন্দু বলি। মূলত বিন্দুকে অনুমান করা যায় কিন্তু এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা কিছুই পরিমাপ করা যায় না। এটি মূলত একটি ক্ষুদ্রতম চিহ্ন। সুতারং যার বা যে চিহ্নের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, ভেদ কিছুই নেই শুধু মাত্র অবস্থান আছে, তাকে বিন্দু বলে। আমরা কলম বা পেন্সিল দিয়ে খাতার উপর যে ফোটা দিই, তাই ই বিন্দু।
চলার পথ কি- আমরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে গেলে যে পথে যাই তাকেই চলার পথ বলে। এখন পথ চলতে চলতে আমরা যদি পথে রং ছিটাতে ছিটাতে যাই তবে রং ছিটানো অংশের পুরো দৈর্ঘ্য কেই চলার পথ বলবে। অর্থাৎ আমরা কোন স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে যে পথ টুকু যাই তাকেই আমাদের চলার পথ বলে।
রেখা কিঃ
ইংরেজি Line বা Vein বা Stria অর্থ রেখা। কোন বিন্দু মনে করো হাটা শুরু করলো। হাটতে হাটতে বিন্দুটি তোমাদের বাড়ি থেকে তোমার বিদ্যালয়ে পৌছাল। বিন্দুটি তোমাদের বাড়ি থেকে হাটা শুরুকরে তোমার বিদ্যালয়ে যে যে পথে যতটুকু লম্বা পথ পার করলো, এই পুরো পথ কেই বিন্দুটির চলার পথ বলে। বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ পথের দূরত্ব হলো ঐ বিন্দুর তৈরি রেখা। আর এই চলার পথে যদি রং ছিটাতে ছিটাতে বিন্দুটি যেতো তবে এই রং ছিটানো পথি হতো বিন্দুটির রং ছিটানো রেখা পথ। অর্থাৎ বিন্দুর চলার পথ কেই রেখা বলে।
রেখার ধরণঃ
বিন্দু হেলে দুলে বা সোজা যে কোন ভাবে চলতে পারে। আবার আঁকাবাঁকা বা সোজা পথেও চলতে পারে। বিন্দু হোক সে সোজা পথে অথবা বাকা পথে, যাই হোক না কেন, যে যে পথে বিন্দুটি যাবে সেই পথকেই রেখা বলবে। বিন্দু চলতে গেলে রং ছিটাতে ছিটাতে যাই তাই দাগ ফেলে যাই। এই দাগ পড়ে তোমার কলম বা পেন্সিল থেকে। সুতারং কোন বিন্দু চলতে শুরু করল আঁকাবাঁকা বা সোজা আর সে যে যে পথে গেল তুমি তা বোঝাতে তার পথে দাগ দিয়ে গেলে। তোমার দাগ দেওয়া অংশ টুকুই হবে বিন্দুর চলার পথ বা রেখা। বিন্দু যেহেতু আঁকাবাঁকা বা সোজা দুই ভাবেই চলতে পারে তাই তার চলার পথ বা ধরন দুই প্রকার। যথা-
- ১. সরল ধরন বা সরলরেখা
- ২. আঁকাবাঁকা ধরন বা বক্ররেখা
সরলরেখাঃ
বিন্দু সোজা পথে গেলে সরল পথ তৈরি হয়। সুতারং বিন্দু চলার সরল বা সোজা পথকে সরল রেখা বলে। অর্থাৎ যে রেখা সোজা পথে যায় তাকে সরলরেখা বলে।
বক্ররেখাঃ
বিন্দু আঁকাবাঁকা পথে গেলে আঁকাবাঁকা পথ তৈরি হয়। সুতারং বিন্দু চলার আঁকাবাঁকা বা বক্র পথকে বক্ররেখা বলে। অর্থাৎ যে রেখা বাকা পথে যায় তাকে বক্ররেখা বলে।
রেখার বৈশিষ্ট্যঃ
রেখার বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নে তুলেধরা হলো-
- ১. বিন্দু যে পথে যাই তাই-ই রেখা।
- ২. বিন্দু অনির্দিষ্ট স্থান থেকে আসে এবং পথ চলতে শুরু করে কিন্তু কখনো থামে না তাই এর কোন শেষ নেই।
- ৩. রেখার শুরু বা শেষ নেই।
- ৪. খাতায় বা কোথাও রেখা আকতে গেলে যেখান থেকে আকা শুরু করতে হয় সেখানে রেখার উপর তীর চিহ্ন দিতে হয় যাতে এটা বোঝা যায় যে এর আগেও আরো রেখা আছে।
- ৫. খাতায় বা কোথাও রেখা আকতে গেলে যেখানে রেখা আকা শেষ করতে হয় সেখানে রেখার উপর তীর চিহ্ন দিতে হয় যাতে এটা বোঝা যায় যে এর পরেও আরো রেখা আছে।
- ৬. রেখার কোন শুরু বা শেষ নেই তাই এর কোন প্রান্ত বা শেষ বিন্দু নেই।
- ৭. রেখা সোজা বা আঁকাবাঁকা যে কোন রকমি হতে পারে।
- ৮. রেখা থেকে রশ্মি এবং রেখাংশের উৎপত্তি বা সৃষ্টি হয়।
- ৯. ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ বা বহুভুজ আঁকতে সরলরেখার প্রয়োজন হয়।
- ১০. রেখা দুই প্রকার হলেও কোথাও রেখার কথা উল্লেখ থাকলে সরলরেখা ধরা হয়।
- ১১. একটি বিন্দু অপর কোন বিন্দুকে কেন্দ্র করে বিন্দুটির চার পাশে সমান দুরত্ব রেখে একবার ঘুরে যে বাকা পথ বা রেখা তৈরি করে তাকে বৃত্তবলে।
- ১২. রেখার কোন প্রস্থ নেই।
- ১৩. রেখার দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু নির্দিষ্ট কোন দৈর্ঘ্য নেই।
- ১৪. সরলরেখা কখনো নিজেকে ছেদ করতে পারে না।
- ১৫. বক্ররেখা নিজেকে যত ইচ্ছা ছেদ করতে পারে।
- ১৬. কোনো সরলরেখার উপর কোনো এক বিন্দুতে যে কোণ উৎপন্ন হয় তা দুই সমকোণ বা এক সরলকোণ বা ১৮০⁰ এর সমান।
আশাকরি রেখার বৈশিষ্ট্য গুলো সকলের খুবি উপকারে আসবে। কোনো বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বুঝতে অসুবিধা হলে নিচে কমেন্ট করতে ভুলো না, কেমন? রেখা সম্পর্কে ধারনার্জনের মাধ্যমে এবং রেখার বৈশিষ্ট্য গুলো আয়ত্তের মাধ্যমে নিশ্চিৎ জ্যামিতি আরো সুন্দর ভাবে বুঝতে পারবে।
নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon