সরল বা সরলীকরণ - সহজ পদ্ধতি
গনিত বা বীজগণিতে সরলীকরণের মাধ্যমে প্রায় সকল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা হয়ে থাকে। এই আর্টিকেল পড়ার পর আর সরলীকরণ নিয়ে ভয় থাকবে না, এবার সমাধান হবে খুব সোজা!
সরলীকরণ |
ভূমিকাঃ
যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ ও ব্রাকেটের ব্যবহার ও এ সকল পদ্ধতি অবলম্বন করে গণিতের সমাধান করতে সরল বা সরলীকরণের ভূমিকা অপরিসীম। এই পাঠে আমরা সরল বা সরলীকরণের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারব।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা তাহলে শুরু করা যাক। আজ আমরা শিখব কিভাবে সহজে যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ ও ব্রাকেট বা বন্ধনী সম্বলিত গাণিতিক রাশির সমাধানের নিয়মাবলী।
সরলীকরণের নিয়মঃ
সরল মান বের করার জন্য আমাদের নিম্নোক্ত নিয়মাবলী মনে রাখা খুবি জরুরি। নিয়ম গুলো হল-
- যোগ ও বিয়োগের ক্ষেত্রে সমান চিহ্নে যোগ হয় এবং বড় সংখ্যার আগে যে চিহ্ন সেই চিহ্ন উত্তর হয়, যেমন +৩+৫ =+৮ বা -৩-৫ =-৮
- যোগ ও বিয়োগের ক্ষেত্রে অসমান চিহ্নে বিয়োগ হয় এবং বড় সংখ্যার আগে যে চিহ্ন সেই চিহ্ন উত্তর হয়, যেমন +৩-৫ =-২ বা -৩+৫ =+২
- গুন বা ভাগের ক্ষেত্রে সংখ্যাগুলো সাধারন নিয়মে গুন বা ভাগ বা কাটাকাটি করতে হয় কিন্তু উত্তরে সব সময় সমান চিহ্নে যোগ চিহ্ন বা প্লাস চিহ্ন এবং অসমান চিহ্নে বিয়োগ চিহ্ন বা মাইনাস চিহ্ন নিতে হয়, যেমন (+৩)×(+২) =+৬ বা (-৩)×(-২) =+৬ বা (+৩)×(-২) =-৬ বা (-৩)*(+২) =-৬
- ব্রাকেট বা বন্ধনীর পূর্বে প্লাস চিহ্ন বা যোগ চিহ্ন থাকলে ব্রাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন উঠিয়ে দিলে ব্রাকেট বা বন্ধনীর ভিতরে থাকা সংখ্যগুলির পূর্বে যে চিহ্ন ছিল ঠিক সেই চিহ্ন থাকবে, যেমন +(-৩+২) =-৩+২ =-১
- ব্রাকেট বা বন্ধনী পূর্বে মাইনাস চিহ্ন বা বিয়োগ চিহ্ন থাকলে ব্রাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন উঠিয়ে দিলে ব্রাকেট বা বন্ধনীর ভিতরে থাকা সংখ্যগুলির পূর্বে যে চিহ্ন ছিল তা পরিবর্তিত হয়ে বিপরীত চিহ্ন হবে, যেমন -(-৩+২) =+৩-২ =+১
- ব্রাকেট বা বন্ধনীর আগে কোন চিহ্ন না থেকে কোন সংখ্যা থাকলে ব্রাকেট বা বন্ধনী উঠিয়ে দিলে সেই সংখ্যা ব্রাকেট বা বন্ধনীর ভিতরে থাকা সংখ্যাগুলির সাথে গুন হবে এবং সেই সংখ্যার আগে যোগ চিহ্ন থকলে ভিতরের সংখ্যাগুলোর চিহ্নের কোন পরিবর্তন হবে না, যেমন +৫(-৩+২) =-১৫+১০ =-৫
- ব্রাকেট বা বন্ধনীর আগে কোন চিহ্ন না থেকে কোন সংখ্যা থাকলে ব্রাকেট বা বন্ধনী উঠিয়ে দিলে সেই সংখ্যা ব্রাকেট বা বন্ধনীর ভিতরে থাকা সংখ্যাগুলির সাথে গুন হবে এবং সেই সংখ্যার আগে বিয়োগ চিহ্ন থকলে ভিতরের সংখ্যাগুলোর চিহ্নের পরিবর্তন করতে হবে, যেমন -৫(-৩+২) =+১৫-১০ =+৫
- ব্রাকেট বা বন্ধনী ৩ প্রকার ১ম বন্ধনী বা ফার্স্ট ব্রাকেট (), ২য় বন্ধনী বা সেকেন্ড ব্রাকেট {}, ৩য় বন্ধনী বা থার্ড ব্রাকেট []।
- সরল অংকে প্রথমে প্রথম ব্রাকেট বা বন্ধনীর কাজ তার পর দ্বিতীয় ব্রাকেট বা বন্ধনীর কাজ এবং তার পর তৃতীয় ব্রাকেট বা বন্ধনীর কাজ করতে হয়। [৫+{৫-(৫+২)}] =[৫+{৫-(+৭)}] =[৫+{৫-৭}] =[৫+{-২}] =[৫-২] =[+৩] =+৩
- সরল করতে গেলে যে ব্রাকেট বা বন্ধনীর কাজ করা হোক না কেন সেই ব্রাকেট বা বন্ধনীর মাঝে প্রথমে "এর"এর কাজ তার পর "ভাগ" এর কাজ তার পর "গুন" এর কাজ এবং সর্ব শেষ যোগ ও বিয়গের কাজ করতে হয়। 5+6এর¹/₂-6÷2×3 =5+3-6÷2×3 =5+3-3×3 =5+3-9 =8-9 =-1
- সরল অংকে সংখ্যাগুলো ভগ্নাংশ আকারে থাকলে ভাগ করতে গেলে ভাগ চিহ্ন কে গুন চিহ্নে রূপান্তর করতে হয় এবং পরের ভগ্নাংশকে উল্টিয়ে দিতে হয় অর্থাৎ হর কে পরিবর্তন করে লব এবং লব কে পরিবর্তন করে হর করতে হয়।¹/₂÷¹/₄ =¹/₂×4 =2
- ভগ্নাংশ সম্বলিত সরল অংকে গুন থাকলে উপর এর সংখ্যার সাথে নিচের সংখ্যার গুননীয়কে মিল থাকলে কাটা কাটি করা যায়। ⁴/₃׳/₄ =1
- ভগ্নাংশ সম্বলিত সরল অংকে যোগ বা বিয়োগ করতে গেলে হর গুলোর ল.সা.গু করে হর দ্বারা ল.সাগু কে ভাগ করে যে উত্তর পাওয়া যায় তাকে লব দ্বারা গুন করে যে গুনফল পাওয়া যাই সেগুলিকে যোগ বা বিয়োগের সমষ্টি করে যে উত্তর পাওয়া যাই তাকে পূনরয় লসাগু দিয়ে ভাগ করে উত্তর বের করতে হয়। ¹/₃+¹/₃-¹/₃ =(¹×²+¹×²-¹×²)/₃ =(²+²-²)/₃ =(⁴-²)/₃ =²/₃
শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের বোঝার সুবিধার্থে কিছু প্রাকটিস বা অনুশীলন দেওয়া হল। আশা করি নিজে নিজে চেষ্টা করলে পারবে। যদি কোন সমস্যা হয় তবে তোমাদের শিক্ষকের বা বন্ধুর সাহায্য নিতে ভুলোনা যেন। গণিতের মৌলিক এসকল বিষয় জানতে ও ভালো ভাবে বুঝতে পারলে আশা করি গণিতে ভালো করতে পারবে।
অনুশীলনঃ
সরল করঃ
আজ এ পর্যন্তই, আশা করি আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে হাজির হব। পরবর্তী মৌলিক বিষয় জানতে নিজ নিজ শ্রেনী অপশনে ক্লিক করতে ভুলো না কেমন।
নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon